অ্যাফিলিয়েট সাইটের জন্য কনটেন্ট লেখা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা পার্ট । এই অংশে সবচেয়ে বেশি সময় যায় এবং সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি । কারণ এর সাথে অন-পেজ এসইও জড়িত আছে । এর অর্থ এই না যে বাকিগুলো কম জরুরি । সব কিছু জরুরি অ্যাফিলিয়েট সাইট তৈরী করে র্যাংক করার জন্য ।
এই পোস্টে আলোচনা করব আমার সাইটের জন্য কিভাবে আর্টিকেল লিখি + একই সাথে আমার সাইটের পাশাপাশি বেশ কিছু ক্লায়েন্টের জন্যও আর্টিকেল লেখার সার্ভিস দিয়ে থাকি । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একই মেথড ফলো করি । কিভাবে লেখালেখি করি সেটা নিয়েই এই পোস্ট ।
লেখার আগে আমি আগে বেশ কিছু আগে ভাগ করে নেই লেখার ধরণ অনুযায়ী । লেখার ধরণ অনুযায়ী এটা পরিবর্তন হতে পারে । প্রথমত টপিক সিলেকশন, কম্পিটিটর রিসার্চ, কনটেন্ট রিসার্চ এবং মাথায় রাখা দরকার যথাযথ ভ্যালু ভিজিটর কিভাবে পাবে । ভ্যালুর ব্যাপারটা এজন্য বলছি, যাতে করে ভিজিটররা রেলেভেন্ট কনটেন্ট পান । যেকোন ধরণের কন্টেন্ট র্যাংক করার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাক্টর ।
সম্পূর্ণ কনসেপ্টটা ভালভাবে বোঝার জন্য চলুন আমরা একটা ছোট কেস দেখি । একটা র্যান্ডম কি-ওয়ার্ড যেমনঃ best cup holder নিচ্ছি । এখানে প্রথম কাজ হবে কিওয়ার্ড টা লিখে গুগল করা । গুগল করলে টপ রিলেভেন্ট রেজাল্ট গুলো নিউ ট্যাবে ওপেন করব সাধারণ ভাবে । এরপর ধীরে সুস্থে পড়ব লেখাগুলো কনসেপ্ট বোঝার জন্য । এমনটা অনেকে করে থাকেন হয়তো, শুধুমাত্র আউটলাইন অথবা হেডিং গুলো দেখেই আর্টিকেল লেখা শুরু করে দেন । টপ পেজে সাধারণত রেলেভেন্ট রেজাল্ট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যদি সেটা মিডিয়াম বা হাই-ডিমান্ড কি-ওয়ার্ড হয় । এখানে আমি সাধারণত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটা দেখার চেষ্টা করে যে সেটা রেলেভেন্ট আর্টিকেল কি না। এটা করলে আর্টিকেলের ব্যাপারে সম্যক ধারণা চলে আসবে এবং লেখার সময় ইউজার ইন্টেন্ট ফুলফিল করা সহজ হবে ।
তাহলে এবার যখন আর্টিকেল পড়া হলো । টপ আর্টিকেল গুলো কি কি টপিক কভার করেছে সেটা অবশ্যই এনালাইসিস করতে হবে । পাশাপাশি আমরা নোট ডাউন করব তারা কি টপিক কভার করছে । বেশ কয়েকটা টপিক সিলেক্ট করলেই বুঝে যাব প্রতিটা আর্টিকেলে কি কি গ্যাপ থাকতে পারে । তাহলে আমরা ওই গ্যাপ গুলো কভার করলে আর্টিকেল একটা ভাল স্ট্রেন্থ পাবে । এরপরে আমাদেরও শুরু করতে হবে লেখা । কিন্তু এর আগে অন্যতম একটা কী-পয়েন্ট আছে । প্রোডাক্ট সিলেক্ট করা । যদি দেখেন রিভিউ আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট আপনাকে প্রোডাক্ট লিস্ট দিয়ে দিয়েছে তাহলে তো সেগুলোর রিভিউ লেখা শুরু করে দিবেন কিংবা যদি নিজের ওয়েবসাইট হয়, সেক্ষেত্রে নিজেই প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হবে ।
প্রোডাক্ট কিভাবে সিলেক্ট করা যায়? এটার জন্য সলিড ফর্মুলা নেই । তবে বেসিক কিছু বিষয় অবশ্যই ফলো করতে হবে সেটা নাহলে কনভার্সন হওয়ার চান্স কমে যাবে । কারণ প্রোডাক্ট ভাল না হলে যতই সুন্দর আর্টিকেল হোক ভিজিটররা কিন্তু কিনতে আগ্রহী হবে না । উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি আপনি এমন একটা প্রোডাক্ট সিলেক্ট করেছেন যার রেটিং অনেক খারাপ । আমাজন বা অন্য যেকোন প্রোডাক্ট রিভিউ এর জায়গায় খুবই বাজে রিভিউ দিচ্ছে সবাই । তাহলে কি কিনবে কেউ? এছাড়াও আরও বেশ কিছু স্ট্র্যাটেজি আছে এখানে কিছু বিষয় একটু পরে শর্টে বলছি ।
…
প্রোডাক্ট সিলেক্ট করার পরেই মূলত কন্টেন্ট স্ট্রাকচার বা কন্টেন্ট ফরম্যাট নিয়ে চিন্তা করতে হবে । এক্ষেত্রে অবশ্যই কম্পিটিটরদের দিকে খেয়াল করতে হবে । তারা কিভাবে কন্টেন্ট লিখছে এটা দেখা গুরুত্বপূর্ন কারণ গুগল এ ধরনের কন্টেন্ট চায় বলেই সেগুলোকে র্যাংক দিয়েছে । দিন শেষে এটাই বোঝা যায় যে ইউজাররাই এ ধরনের কনটেন্ট আশা করে তাহলে ঠিকভাবে ইউজার ইন্টেন্ট পূরন হবে । উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, আপনি যদি “top tips for making good quality article”
এই কিওয়ার্ডের দিকে খেয়াল করেন টপ রেজাল্টের বেশিরভাগ ওয়েবসাইটে বুলেট আকারে বা সংখ্যার মাধ্যমে হেডিং করে টিপ্স শেয়ার করেছে । এর অর্থ ইউজার এ ধরণের কন্টেন্ট ই চাচ্ছে । এখানে আপনি যদি লম্বা প্যারগ্রাফ টাইপ আর্টিকেল লেখেন তাহলে গুগলে অপছন্দ করার চান্স বেশি । তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে সব সময় কম্পিটিটরই সঠিক এমন না । কিছু বহুল ব্যবহৃত কনটেন্ট ফরম্যাট দিচ্ছি নিচে ।
- How to
- Listings/Listicles
- News Article
- Reviews
- Opinion/Thought
কখনো যদি দেখেন কম্বাইন্ড বা মিক্সড কনটেন্ট অর্থাৎ কেউ হয়তো লিস্টিং ফরম্যাটে লিখেছে আবার কেউ হয়তো প্যারাগ্রাফ আকারে লিখেছে, তখন আপনার নিজস্ব কমন সেন্স অনুযায়ী যেটা বেস্ট মনে হবে সেভাবেই লিখবেন ।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ন টার্মস আছে । সেটা হচ্ছে, Content Angle । এটা হচ্ছে কন্টেন্টটা মূলত কি টাইপ । যেমন ব্লগ আর্টিকেল নাকি ইকমার্স প্রোডাক্ট পেজ, অথবা ব্লগকে আবার ভেঙে বললে, ইনফো আর্টিকেল নাকি রিভিউ আর্টিকেল নাকি ভিডিও ফোকাজড কন্টেন্ট এগুলো অবশ্যই বুঝতে হবে কম্পিটিটর রিসার্চ + নিজস্ব কমন সেন্স ব্যবহার করে । বেশ কিছু কমন ফ্যাক্ট আছে যেমন, best দিয়ে কোন কিওয়ার্ড থাকলে সেটা মানি আর্টিকেল আবার how to/what থাকলে সেটা ইনফো । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এরকম হতে পারে । কিন্তু একটা কীওয়ার্ড দেখুন, best way to recognize scientific calculator । এটাতে best থাকলেও এটা কোন মানি কীওয়ার্ড না । সো এখানে কমন সেন্স ব্যবহার করে বুঝতে হবে ।
কখনো কখনো আপনার নিজের কাছে ভিন্ন স্ট্রাকচার পছন্দ হলে অবশ্যই সেটা ইমপ্লিমেন্ট করে দেখতে পারবেন । কারণ হচ্ছে অনেক সময় ইরিলেভেন্ট কন্টেন্ট র্যাংক হয়ে থাকতে পারে যথাযথ কন্টেন্টের অভাবে । এজন্যই এসইও বা এখানে আর্টিকেল লেখার পার্ট টা ইমপ্লিমেন্ট করে করে দেখতে হবে কেমন আউটপুট আসে । এটা অবশ্য আপনি SERP দেখলেই বুঝে যাবেন । চাইলে আরো দুয়েকটা উদাহরণ দেওয়া যায় । যদিও আশা করছি বুঝতে পারছেন মূল ব্যাপারটা কি ।
যেমন আপনি যদি দেখেন কম্পিটর Pros and Cons টেবিল দিয়েছে আপনারও সেটা কভার করা উচিত । আবার কম্পিটর কোন প্রোডাক্ট কোন শ্রেণির মানুষের জন্য বেশি ভাল এটা আলাদা একটা পয়েন্ট আকারে দিচ্ছে । আপনারও উচিত তাহলে ইউনিক ভাবে এরকম কন্টেন্ট রিপ্রেজেন্ট করা । এক্ষেত্রে আপনাকে নিজে থেকে প্রচুর রিসার্চ এবং ক্রিয়েটিভ চিন্তা করতে হবে । তাহলে অনেক আইডিয়া চলে আসবে ।
Ahrefs ব্লগের মতে এসইও ফোকাসড আর্টিকেলের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে-
- Be relevant
- Be thorough
- Be unique
- Be clear
আমার মতে প্রত্যকটা পয়েন্টই যথেষ্ট অর্থবহ । আমি অল্প পরিসরে বলছি । এখানে Relevant থাকা বলতে অবশ্যই কনটেন্ট এর কথাবার্তা টপিকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন হতে হবে । যেমন Best Coffee Maker এই টপিক বা কী-ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে অবশ্যই কফি মেকার নিয়েই কথা বলতে হবে । এখানে যদি আপনি ওয়াটার হিটার নিয়ে কথা বলেন, তাহলে জিনিসটা অর্থবহ থাকবে না । এটা গুগল পছন্দ করবে না । এছাড়াও এমন কিওয়ার্ড আছে যেগুলো হয়তো ইকমার্স সাইটে র্যাংক করা আছে ।
এক্ষেত্রে আপনি এফিলিয়েট সাইট র্যাংক করতে চাইলে কিন্তু রেলেভেন্ট হবে না । প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে বুঝবেন এটা কি ধরনের কিওয়ার্ড? সহজ উত্তর, গুগল করলেই বুঝে যাবেন এটা কি ধরনের কিওয়ার্ড । বেশিরভাগ রেজাল্ট যদি ইকমার্স থাকে তার অর্থ এই কীওয়ার্ডের জন্য গুগল ইকমার্স সাইটকেই র্যাংক দিবে । তো সেটা নিয়ে কাজ না করাই ভাল হবে যদি না আপনার ইকমার্স সাইট বা সাইটে ইকমার্স সেকশন না থাকে । এর মধ্যে আরো অনেক অনেক বিষয় আছে যেগুলো সময় নিয়ে অন্য একদিন কথা বলব ।
Be thorough, হ্যা লেখা অবশ্যই পরিপূর্ণ হতে হবে । আপনি Best Coffee Maker নিয়ে লিখছেন । এখন একজন ভিজিটরকে সমস্ত ব্যাপারটাই বুঝিয়ে বলতে হবে । কফি মেকার কি, কি কি ধরনের কফি মেকার আছে এবং বিভিন্ন প্রকার কফি মেকার এর আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে যাদের কাজ ভিন্ন ভিন্ন। এখানে এটা বুঝে আর্টিকেলটা লিখতে হবে । কারণ হচ্ছে উক্ত আর্টিকেল দ্বারা আপনি একজন ভিজিটর বা সম্ভাব্য ক্রেতাকে গাইড করছেন কফি মেকারের ব্যাপারে । তো ধরুন একজন ক্যাপাচিনো কফি বানানোর মেশিন খুজছে এই কিওয়ার্ড দিয়ে । অথচ আপনি কোল্ড কফি তৈরীর প্রোডাক্টই শুধু কভার করলেন । তাহলে কিন্তু হবে thorough হলো না । কম্পিটরদের লেখা পর্যবেক্ষন করে এই ব্যাপারটাও মাথায় রাখা জরুরি ।
Be unique দ্বারা নিশ্চই বুঝে গেছেন কি বোঝানো হলো । লেখাটা ইউনিক হতে হবে । কারো থেকে কপি করা যাবে না অবশ্যই, আবার কারো লেখা রি-রাইট করলে, কারো টেমপ্লেট ফলো করলেও ঝামেলা । একজন কম্পিটর যেভাবে আর্টিকেল লিখছে সেই একই মেথডে, একই ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে একই ধরনের রিভিউ লিখলে কিন্তু গুগলের নজরে আসবে না । গুগল চিন্তা করবে এই ধরনের কনটেন্ট অলরেডি র্যাংকে আছেই । সো পরেরটার দরকার পড়বে না । এজন্যই আরো বেশি রিসোর্সফুল ও সমৃদ্ধ হতে হবে যাতে গুগলের নজরে আসে যে এই ব্যক্তির কনটেন্ট ভিজিটরকে আরো বেশি হেল্প করবে । তখনই র্যাংক করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে ।
আপনার লেখা Clear হতে হবে । অর্থাৎ যা বোঝাতে চাচ্ছেন, পাঠক যেন সহজেই বুঝতে পারেন । অনেকে এমন করে থাকেন, লেখার জন্য লিখছেন । এমন সব বাক্য লিখছেন যার কোন অর্থ হয় না । এগুলো লিখলে পাঠক বিভ্রান্ত হবে এবং কোন বেনিফিট পাবে না যেটার কারনে র্যাংক করার সম্ভাবনাও কমে যাবে অনেক ।