সবাই ভাল আছেন আশা করি । চলুন আজ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলি । এই বিষয়টি নতুন বা পুরাতন উদ্যোক্তা সকলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ । আমরা ইদানিং সকলেই রেগুলারলি দেখছি ফেসবুকে পেজ বুস্টিং জিনিসটা অনেক জনপ্রিয় হচ্ছে । এখন কথা হচ্ছে এই বুস্টিং জিনিসটা কী? এটা ভাল নাকি খারাপ? আবার অনেকে ফেসবুকে এড দেওয়ার কথা বলে । অথবা ক্যাম্পেইন দেওয়ার কথাও বলে । পেইড প্রোমোশনের জন্য পরচিত এই দুই টার্মস নিয়ে আজকের পোস্ট ।
বুস্টিং কী?
প্রথমেই জেনে নেই বুস্টিং কী? আপনারা প্রতিনিয়ত শুনে থাকবেন হয়তো, বুস্টিং করুন মাত্র এত টাকা । অথবা ডলার রেট এত আজই বুস্ট করুন । প্রচুর এড দেখা যায় এই টাইপের । তো সোজাসুজি বললে, সবচেয়ে সহজ ভাবে ফেসবুকে পেজ প্রোমোট করাটাই হলো বুস্টিং । ফেসবুক এই ফিচার টা রেখেছে যারা একেবারেই নতুন তারা যেন অতি সহজে ফেসবুকে পেজ বা ব্যবসা প্রোমোট করতে পারে । এই পদ্ধতিতে আপনার বিশেষ ভাবে তেমন কোন কিছু জানা থাকার প্রয়োজন পড়ে না । আপনার ফেসবুক পেজের প্রতিটি পোস্টের নীচেই দেখবেন Boost Post বলে একটা বাটন আছেন । এখানে ক্লিক করে অল্প কিছু ধাপ সম্পন্ন করলেই আপনার পোস্টের এড চালু হয়ে যাবে । খুব একটা কঠিন না । একটু সময় দিলেই সহজে করে ফেলা সম্ভব । তবে এখানে একটা বড়সড় কিন্তু আছে । আমি সরাসরি কাউকে বলি না এটা করতে । এটাকে খারাপ বলছি না । আপনি দ্রুত একটা এড রান করলে এই অপশন চুজ করতেই পারেন । তবে এটার থেকেও ভাল অপশন আছে । এর আগে বলে নেই এটা কেন ভাল অপশন নয়?
বুস্টিং এর মেইন ফিচার ও সীমাবদ্ধতা
দেখুন, ফেসবুকে এড প্রোমোট করা হয় যাতে আপনার এড টা সঠিক অডিয়েন্স বা কাস্টোমার এর কাছে পৌছায় । অডিয়েন্স বিষয়ক আরেকটি বিস্তারিত পোস্ট আছে এখানে । যাইহোক সকল ব্যবসারই মেইন টার্গেট এটাই থাকে । কিন্তু বুস্ট ফিচার থেকে এটা ভালোভাবে করা সম্ভব হয় না । ভালোভাবে ডিপ টার্গেট করা সম্ভব হয় না । এছাড়া এড অবজেক্টিভ বা এড দেওয়ার মূল উদ্যেশ্য অনুসারে ফেসবুকের যেই ফিচার সেটা বুস্ট ফিচার থেকে ভালোভাবে হয় না । এক্ষেত্রে শুধুমাত্র রিচ ক্যাম্পেইন হয় । কিন্তু দেখুন আপনার প্রোডাক্ট এর দাম যদি একটু বেশি হয় অথবা একটু আনকমন প্রোডাক্ট হয় সেক্ষেত্রে কিন্তু এক বার এড দেখিয়েই কাস্টোমারকে মোটিভেট করা সম্ভব না । একারণে আপনাকে ভিন্ন পন্থায় এড দিতে হবে কিন্তু বুস্ট ফিচার দিয়ে ভাল হয় না সেটা ।
বুস্টিং কিভাবে করতে হয়?
বুস্টিং করা খুবই সহজ কাজ । যেহেতু ফেসবুক এটা করার জন্য প্রোমোট করে, একারণে ওরা এটাকে সহজ করে প্রেজেন্ট করে । আর আপনি হয়তো খেয়াল করে দেখবেন যদি একটা পেজ থেকে থাকে, তারা আপনাকে অনেক বেশি উৎসাহিত করে বুস্ট করার জন্য । ফেসবুক এই কাজ করে কারণ এটা ওদের জন্য লাভজনক । যাইহোক এরপরো যদি আপনি যদি জানতে চান কিভাবে বুস্ট করতে হয় তাহলে অল্প কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে ।
ধাপ ১
প্রথমে উপরে আমার পেজের স্ক্রিনশট দেখালাম সেরকম আপনার পেজের যেকোন পোস্টের নিচে Boost Post বাটনে ক্লিক করতে হবে । এরপর প্রথমে পোস্টের সাথে কোন বাটন এড করবেন সেটা সিলেক্ট করতে হবে । (প্রথম ছবি তে দেখুন) । এরপর ম্যাসেজ পোস্ট করতে চাইলে ম্যাসেজ বাটন সিলেক্ট করবেন । স্পেশাল এড ক্যাটাগরি অফ রাখতে হবে, যদি আপনি ইলেকশন, পলিটিক্যাল প্রোমোশন করতে চান ।
ধাপ ২
এরপরের অংশটি গুরুত্বপূর্ণ । আপনি কাদের কাছে আপনার পোস্টটি বুস্ট করতে চান সেটাও গুরুত্বপূর্ণ । বয়স, লোকেশন ইত্যাদি সিলেক্ট করে এরপরের ধাপে যেতে হবে । ডিফল্ট ভাবে সিলেক্ট করা থাকে । তবে এটি না করাই ভাল । তবে বলে রাখা ভাল যে এখানে শুধু মাত্র স্বল্প সংখ্যক অপশন থাকে অডিয়েন্স নির্বাচনের ক্ষেত্রে । যেটা মোটেও যথেষ্ট নয় । এবং রেজাল্ট ও ভাল আসে না । আর শুধুমাত্র রিচ অব্জেক্টিভ ব্যবহার করা যায় এখান থেকে । মার্কেটিং এর যথাযথ প্রয়োগ করা যায় না ।
ধাপ ৩
এই ধাপে আপনি কত টাকা কতদিন ধরে খরচ করবেন সেটা সিলেক্ট করতে হয় । জানিয়ে রাখি বাজেট অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রেও বেশ খানিকটা লিমিটেশন আছে । আপনি জাস্ট ডেইলি বা মোট বাজেট সিলেক্ট করে দিতে পারবেন । এর বেশি তেমন কোন অপশন নেই । তবে দ্রুত পোস্ট বুস্ট বা এড দেওয়ার জন্য ঠিক আছে ।
ধাপ ৪ (শেষ ধাপ)
এরপরের ধাপে পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করে এড রান করে দিতে হবে । তবে এখানে কিছু এক্সট্রা অপশন আছে । যেমন পিক্সেল । আপনার ওয়েবসাইট থাকলে হয়তো এটা কাজে আসতে পারে । কিন্তু এটাও বিজনেস ম্যানেজার থেকে করতে পারলে ভাল সুবিধা পাওয়া যাবে ।
আপনারা হয়তো জেনে গেছেন এতক্ষণে কিভাবে পোস্ট বুস্ট করতে হয় । এখন কথা হচ্ছে আপনার কি এটা করা উচিত? আমি বলব না এটা করা উচিত না । কেন? সেটা নিয়েই এখন কথা বলব ।
ক্যাম্পেইনের মেইন ফিচার ও এর গুরুত্ব (বিজনেস ম্যানেজারের ভুমিকা)
প্রথম কথা হচ্ছে এটার গুরুত্ব ও সুবিধা এক পোস্টে লিখে শেষ করা যাবে না । তবে যেটা বলতে পারি আপনার বিজনেসের সঠিক মার্কেটিং করতে হলে বিজনেস ম্যানেজার ব্যবহার করতে হবে । আর এডভান্স মার্কেটিং করতে হলে ক্যাম্পেইন করতে হবে । উদাহরণ স্বরূপ বলি, আপনি মনে করুন একটা এড একই ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ সংখ্যকবার দেখাতে চাচ্ছেন । এখন এটা কন্ট্রোল করা এবং ডেটা এনালাইসিস করে সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে কিন্তু ক্যাম্পেইন করেই করতে হবে । মার্কেটিং করে যদি আপনার কোন রিটার্ন না আসে তাহলে সমসত অর্থই পানিতে যাবে ।
নিম্নোক্ত কাজ গুলো যদি আপনার ব্যবসার জন্য করতে চান তাহলে অবশ্যই ফেসবুক এড কে বেছে নিতে হবে আপনাকে ।
ম্যাসেজ ক্যাম্পেইনঃ আপনার যদি এফ কমার্স ব্যবসা থেকে থাকে । এবং আপনি ম্যাসেজ ক্যাম্পেইন, ম্যাসেঞ্জার মার্কেটিং করতে চান ।
অ্যাপ ইন্সটলঃ আপনার কোন অ্যাপ থাকলে এবং সেটার প্রোমোট করতে চাইলে ।
ওয়েবসাইট ট্রাফিকঃ আপনার কোন বিজনেস ওয়েবসাইট অথবা সার্ভিস ওয়েবসাইট থাকলে সেটার প্রোমোশনের জন্যেও এড ক্যাম্পেইন করতে হবে ।
শপ অর্ডারঃ ফেসবুক শপে আপনার কোন বিজনেস থাকলে সেটার প্রোমোশনের জন্য ।
ভিডিও ভিউ ও রিটার্গেটঃ আপনার কোন ভিডিও প্রোমোট করতে চাইলে এবং সেটার মাধ্যমে পরবর্তীতে রিটার্গেট করতে চাইলে ।
ওয়েবসাইট রিটার্গেটঃ১ ওয়েব সাইটে ভিজিটর নিয়ে এবং ওই ভিজিটরদেরকে আবার রিটার্গেট করার জন্য ।
ব্র্যান্ডিংঃ আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনার ব্যবসাকে বড় করতে চান, প্রোপার ব্র্যান্ডিং করতে চান তাহলে ফেসবুক এড ক্যাম্পেইন অবশ্যই করতে হবে ।
কোন একটা পণ্যের মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কাস্টোমারকে যথাযথ ভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে অর্থাৎ উক্ত প্রোডাক্ট এর ভালোমন্দ জানাতে হবে । এভাবে একটি ফানেল তৈরী করে মার্কেটিং করলে ভাল রেজাল্ট আসবে । কিন্তু এসমস্ত কার্যক্রম কোনভাবেই পোস্ট বুস্ট ফিচার থেকে করা সম্ভব হয় না । এভাবে পরিপূর্ণ মার্কেটিং এর সুবিধা পেতে আপনাকে ফেসবুক এড ক্যাম্পেন বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিব আমি ।
১। রিটার্গেটিং হচ্ছে আপনার ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইটের সাথে আগের থেকে এঙ্গেজ কোন কাস্টোমার কে আবার টার্গেট করে করে মার্কেটিং করা । এটি একটি চমৎকার ফিচার । এটির ফলে ভালো আউটপুট পাওয়া যায় ।
ইনফরমেটিভ ছিল । ধন্যবাদ ভাই ।